ইতিবাচক এক বাংলাদেশের কথা বলছি

স্বাধীনতার পর থেকে নব্বই এর দশক পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রতি বিশ্বের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল অনেকটাই হতাশাপূর্ণ। কিন্তু বর্তমানে সে অবস্থা আর নেই। বাংলাদেশ আজ মাথায় অনেক সাফল্যের মুকুট পরে ওঠে দাঁড়িয়েছে। উর্বর পলিবাহিত মৃত্তিকার উপরিভাগে সবুজের সমারোহ, নীচে তার অফুরন্ত খনিজ সম্পদ, আর আকাশ সীমায় বিপুল রূপালী মেঘের পাল – যা সারা বছর অন্তরীক্ষে এবং ভূ-গহ্বরে প্রকৃতির সকল উৎস এ দেশকে দান করার জন্য উন্মুখ।

বাংলাদেশের মানচিত্র

বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি। আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যার ঘনত্বের দিক থেকে এ দেশ বিশ্বের শীর্ষ দেশসমূহের অন্তর্গত। বলা হতো, অধিক জনসংখ্যাই দেশের দরিদ্রতা, অশিক্ষা, অপুষ্টি এবং অস্থিতিশীলতার জন্য দায়ী। কিন্তু একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে এ জনসংখ্যাই জনসম্পদ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বর্তমানে প্রায় এক কোটির মত বাংলাদেশি জনশক্তি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশ জনশক্তি রফতানি করে দারিদ্র্য বিমোচন এবং বিভিন্নমুখী উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের মাধ্যমে প্রবৃদ্ধির এই হার অব্যাহত থাকলে ২০২৩ সালে এর বার্ষিক পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ১২০ বিলিয়ন ডলার। ইতোমধ্যেই দেশের বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান খাত হিসেবে স্থান করে নিয়েছে রেমিটেন্স।

মানব সম্পদ উন্নয়ন সূচকের দিক থেকে বাংলাদেশ আশাতীতভাবে ভালো করছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্ব অর্থনীতির বিকাশ ধারায় উচ্চ-মধ্যমাত্রার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দেশগুলোর কাতারে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এমনিতেই অধিক হারে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে। এর মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে সামনের কাতারে। ফলে ইতিবাচক হয়ে ওঠছে বাংলাদেশ, যে ইতিবাচক দেশটিকে দেখার অপেক্ষায় এদেশের ১৬ কোটি মানুষ।

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী দশকগুলোতে বিশ্বের মানচিত্রে বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর মাঝে স্থান করে নিতে সক্ষম হবে বাংলাদেশ। বিশ্বখ্যাত মার্কিন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাচ (Goldman Sachs) বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক চিত্রের সমীক্ষা প্রকাশ করে। বর্তমান বিশ্বের অর্থনৈতিক শক্তির সাতটি বৃহৎ দেশের বাইরে আরও চারটি দেশকে তারা শক্তিধর হিসেবে গণ্য করে। সংক্ষেপে যাদেরকে ব্রিক (BRIC) বলা হয়। ব্রিক সম্পর্কে গোল্ডম্যান স্যাচ-এর সমীক্ষা সঠিক প্রমাণিত হওয়ায় এক্ষেত্রে তাদের গবেষণা পদ্ধতি বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ব্রিক ছাড়া আরও ১১টি দেশকে বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তির দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।

বিশ্বব্যাংক ও আইএফসি প্রকাশিত ‘ÔDoing Business in 2006 : Crating Jobs’ শীর্ষক রিপোর্টে ‘Ease of doing Business Ranking’-এ অনুকূল বিনিয়োগ পরিবেশের ক্ষেত্রে ১৬৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৬৩তম, যেখানে ভারতের অবস্থান ১১৬তম।

‘2020 Bangladesh – A long Run Perspective Study’ শীর্ষক বিশ্বব্যাংকের সমীক্ষায় বলা হয়, ২০২০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে ৮০০ কোটি আমেরিকান ডলারের প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

শিক্ষাক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রভৃত উন্নতি সাধন করছে। ১৯৯০ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু ভর্তির হার ছিল ৭২ শতাংশ, বর্তমানে তা বেড়ে ৯০ শতাংশ হয়েছে। মাধ্যমিক স্তরেও ভর্তি হার বাড়ছে। নারী শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটিয়ে নারীর ক্ষমতায়ন ও আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত মেয়েদের উপবৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করেছে। দেশ সার্বজনীন মৌলিক শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে।

বাংলাদেশে জন্মহার তাৎপর্যপূর্ণহারে কমেছে। ১৯৭৫ সালে প্রজনন হার ছিল প্রায় তিন দশমিক তিন শতাংশ। বর্তমানে জনসংখ্যার প্রবৃদ্ধির হার মাত্র দেড় শতাংশ। এই হার ভারতে দশমিক আট শতাংশ এবং পাকিস্তানে আড়াই শতাংশ। গত শতকে শিশুমৃত্যুর হার বাংলাদেশে যেভাবে কমেছে আর কোন উন্নয়নশীল দেশে এতটা দ্রুতহারে কমেনি। দেশে শিশুমৃত্যুর হার বছরে পাঁচ শতাংশ হারে কমছে।

প্রসূতি মায়ের অপুষ্টির হার ১৯৯৬ সালে ছিল ৫২ শতাংশ। ২০০০ সালে তা কমে হয়েছে ৪২ শতাংশ। আগে বাংলাদেশের নারীদের গড় আয়ু পুরুষের চেয়ে অনেক কম ছিল। বর্তমানে পুরুষের গড় আয়ুর চেয়ে নারীদের গড় আয়ু বেশি। এক্ষেত্রে সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সবচেয়ে ভালো।

নারীদের শ্রমবাজারে অংশ নেয়ার হারও বেড়েছে। ১৯৮৩-৮৪ সাল গ্রাম ও শহরাঞ্চলে নারী শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ ছিল যথাক্রমে ৭ ও ১২ শতাংশ। ১৯৯৯-২০০০ সালে তা বেড়ে হয়েছে যথাক্রমে ২২ ও ২৬ শতাংশ।

বাংলাদেশে নারীরা তাদের সাহস ও দক্ষতার মাধ্যমে প্রশাসনসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করে চলেছে। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র, পরররাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালায়ের দায়িত্বে আসীন রয়েছে নারীরা। তাই সহজেই বলা যায়, বাংলাদেশে বহু আকাক্সিক্ষত নারীর ক্ষমতায়ন বাস্তবে রূপ নিতে চলেছে।

স্বাধীনতার পর থেকে গত ৪০ বছরে লোকসংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ খাদ্যে অনেকটা স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পেরেছে। এ জন্য বাংলাদেশের নাম “একটি সাফল্যের কাহিনী” হিসেবে উল্লেখ করা যায়।

বিপুল জনশক্তির এই দেশে অদূর ভবিষ্যতে দ্রুতই শিল্পের ব্যাপক বিকাশ ঘটবে। মধ্যপ্রাচ্য, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার উৎপাদনের জন্য যেখানে জনশক্তির ঘাটতি রয়েছে, সেখানে বাংলাদেশে রয়েছে উদ্বৃত্ত বিপুল জনশক্তি। এছাড়া রয়েছে কাঁচামাল, নিজস্ব জ্বালানি সম্পদ এবং উৎপাদন উপযোগী প্রাকৃতিক পরিবেশ। পরিকল্পিত উদ্যোগ নিলে যে কোন শিল্পের বিকাশই এখানে সম্ভব। ১৯৮০-৮১ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনে শিল্পখাতের অবদান যেখানে ১৭.৩১ শতাংশ ছিল সেখানে ২০০৬-০৭ অর্থবছরে ২৯.৭৭ শতাংশ এবং ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ৩৭ শতাংশ অবদান রাখে। আগামী এক দশকে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) শিল্পখাতের অবদান হরে ৪৫ শতাংশ এবং মোট কর্মরত জনশক্তি হবে ৩৭ শতাংশ। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত এতটাই অগ্রসর হয়েছে যে, এই খাত থেকে বছরে ১০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি রফতানি করা সম্ভব। ২০০৬ অর্থবছরে তৈরি পোশাক খাত থেকে ৭৯০ কোটি টাকা আয় হয়। দেশের রফতানি আয়ের ৭৫% আসছে পোশাক শিল্প থেকে Ñ যে শিল্পের সাথে যুক্ত রয়েছেন প্রায় ৪০ লাখ মানুষ এবং পরোক্ষভাবে প্রায় দু কোটি মানুষ এ খাতের সুবিধা ভোগ করছেন।

আগে বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল শুধু স্যাটেলাইট নির্ভর। ২০০৬ সালে সাবমেরিনের কাজ সম্পন্ন হযেছে। সাবমেরিন কেবল সিস্টেমের সফল ব্যবহারের মাধ্যমে স্বল্প সময়ের মধ্যে দেশে তথ্য ও প্রযুক্তিতে প্রভূত উন্নতি সাধিত হবে। আগামী ২০২৫ সালে মোবাইল ও ল্যান্ডফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়াবে যথাক্রমে প্রায় ১২.৩৪ কোটিতে। ২০২৫ সালে এ খাতে কর্মসংস্থান ১ লক্ষ ২০ জনে পৌঁছাবে। প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দেশে সর্বাধুনিক ওয়াই-ম্যাক্স, ওয়াই-ফাই, থ্রিজির কারণে আগামী পাঁচ বছরে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হবে।

বাংলাদেশের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক সম্পদ। বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চল এবং সমুদ্রের তলদেশে অফুরন্ত খনিজের সম্ভাবনা রয়েছে। শুধুমাত্র কক্সবাজার সৈকতের বালু থেকে ম্যাগনেটাইট, জিরকন, ইলমেনাইটসহ “কালো সোনা” উত্তোলন করে প্রায় পাঁচ কোটি বিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব। এছাড়াও সমুদ্রের তলদেশে তেল, গ্যাস ও মূল্যবান ধাতুসহ বিপুল পরিমাণ খনিজ সামগ্রী রয়েছে, যা এখনো অস্পৃশ্য অবস্থায় রয়েছে। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ২৩টি গ্যাসক্ষেত্র এবং ১৭টি তেল খনি আবিস্কৃত হয়েছে। এ খনিজ সম্পদ কাজে লাগাতে পারলে মাথাপিছু আয় ১৪ গুণ বেড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ‘International Energy Outlook 2000-Gi Worldwide Look at Reserve and Production Journal’-এ উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২০ সালে বাংলাদেশ হবে প্রাকৃতিক গ্যাস নির্ভর একক জ্বালানি সমৃদ্ধ দেশ।

পর্যটন খাত থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশের। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার আর বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোড বন সুন্দরবন রয়েছে এখানে। এছাড়া বিখ্যাত কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত, চলনবিল, পাথর সমৃদ্ধ জাফলং, অসংখ্য মাঝারি আকারের টিলা সমৃদ্ধ ফয়েজ লেক, ষাটগম্বুজ মসজিদ ও প্রভৃতি অপরূপ সৌন্দর্যের স্থানগুলো হাজারো পর্যটকের নয়ন জুড়ায় প্রতিনিয়ত।

কয়েক বছর আগে বিশ্ব পর্যটন শিল্পের মহাসচিব ফান্সিসকো ফ্রাংগিউটি বাংলাদেশ সফরে এসে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ পর্যটন শিল্পের বিপুল সম্ভাবনাময় অসাধারণ সৌন্দর্যমণ্ডিত একটি দেশ।’

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের বেড়েছে রেমিটান্স ও বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার। ক্ষমতা বেড়েছে দুর্যোগ মোকাবিলা করার।  ২০০১ সালে দেশের মাথাপিছু জিডিপির পরিমাণ ছিল ৩৬৩ মার্কিন ডলার, যা বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫০ মার্কিন ডলারে। প্রক্ষেপণ থেকে দেখা যায় যে, আগামী ২০৫০ সালে এর পরিমাণ দাঁড়াবে ৪৫০১ মার্কিন ডলার।

ব্রিটিশ হাই কমিশন-এর পর্যালোচনায় বিশ্বের আর্থিক সমস্যার চাপ মোকাবিলা করার শক্তি বাংলাদেশের রয়েছে। ১৯৯৯ সালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং ২০০৮ সালের সারা বিশ্বব্যাপী ব্যাংকিং ও পুঁজিবাজার খাতে ধ্বস নামলেও বাংলাদেশ এ ঝড়ের তাণ্ডব থেকে ছিল অনেকটাই মুক্ত।

বাংলাদেশের সাফল্যের তালিকা দীর্ঘ এবং আকর্ষণীয়। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-এমডিজি অর্জনের দিকে বাংলাদেশ বিস্ময়করভাবে সময়সূচি মেনে এগুচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে ২০১৫ সালে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের মাত্রা অর্ধেক কমিয়ে ফেলার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর নিজস্ব আর্থিক সংকট মোকাবিলার সক্ষমতা রয়েছে, যার জন্য ২০০৮ সালে বিশ্বে খাদ্যমূল্য বৃদ্ধিতে অসহনশীলতা বাড়লেও বাংলাদেশ দক্ষতার সঙ্গে এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পেরেছে। বাংলাদেশের সাফল্যের তালিকা আরও অনেক বেশি দীর্ঘ, যদিও সাফল্যের পাশাপাশি ব্যর্থতাও রয়েছে, এটাও স্বীকার করতে হবে।

সাফল্যের এই তালিকা তুলে ধরার কারণ হলো, আমরা যেন কখনো না বলি- ‘আমরা কিছুই পারি না’, বা ‘কিছুই করা হয়নি এদেশে।’ সাফল্যের এই তালিকা দেখলে নিজেদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জন্মাবে। এ ভাবনা মনের ভেতর জাগ্রত হবে – ‘আমরা উন্নতি সাধন করতে পারি, উন্নয়নে অবদান রাখতে পারি’।

রাজনৈতিক বিভাজন ভুুলে গিয়ে এবং দুর্নীতির মূল উৎপাটন করে জাতীয় স্বার্থকে সবার উপরে স্থান দিতে পারলে আমাদের জাতীয় জীবনে আসবে একের পর এক সাফল্য আর সাফল্য, আমরা পাবো স্বপ্নের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, পাবো ইতিবাচক এক বাংলাদেশ।

যায় যায় দিন, ১৮ মে ২০০৭

Leave a Reply

Your email address will not be published.