বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার দীর্ঘ দু বছর পর বহু প্রতিক্ষিত কয়লা নীতির খসড়া জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দিয়েছে। ২৫ নভেম্বরের মধ্যে এ নীতির ব্যাপারে জনমত চেয়েছে সরকার। মতামত নেয়ার পর যে কোন সময় ‘খসড়া কয়লানীতি-২০১০’ মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেয়া হবে, এমনটাই বলা হচ্ছে। সর্বশেষ সংশোধিত ও সংযোজিত ৩৩ পৃষ্ঠার খসড়া কয়লানীতি ৫ পৃষ্ঠায় নিয়ে আসা হয়েছে। এরফলে এ নীতিতে অনেক বিষয়েই অস্পষ্টতা রয়েছে। এ কয়লা নীতিতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা খনন, বিদেশিদের কাছে কৌশলে কয়লা রফতানি করার বিধান রাখা হয়েছে। কয়লা উঠানোর ফলে যে বিপুল সংখ্যক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে তাদের পূনর্বাসনের বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু বলা হয়নি প্রস্তাবিত কয়লা নীতিতে। খসড়া এ নীতিতে বলা হয়েছে, গ্যাজেট প্রকাশের মাধ্যমে রয়্যালিটি (সরকারের প্রাপ্ত লভ্যাংশ) নির্ধারণ করবে সরকার। এছাড়াও এ নীতিতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, কয়লা অঞল গঠন, শীঘ্রই কয়লা খাত মাস্টার প্ল্যান, খনি উন্নয়ন ও অনুসন্ধান জোরদারের কথা বলা হয়েছে।
প্রণীত হয়েছে একের পর এক কয়লা নীতি
বাংলাদেশে কয়লা নীতি প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয় সর্বপ্রথম ২০০৫ সালে। বিশ্বব্যাংকের একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘আইআইএফসি’-এর মাধ্যমে ২০০৫ এর ১ ডিসেম্বর একটি খসড়া কয়লা নীতি প্রণয়ন করা হয়। প্রতিবাদ ও সমালোচনার মুখে জোট সরকারের আমলে ‘আইআইএফসি’ কর্তৃক আরও চারটি সংস্করণ তৈরি করা হয়। এগুলোর কোনটিই গ্রহণযোগ্য হয়নি। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মার্চ ২০০৭ এ ষষ্ঠ সংস্করণ, জুন ২০০৭ এ সপ্তম সংস্করণ তৈরি করা হয়। পরবর্তীতে আব্দুল মতিন পাটোয়ারির নেতৃত্বে ২০০৮ এর জানুয়ারিতে কয়লানীতির অষ্টম সংস্করণ প্রণয়ন করা হয়। এই সংস্করণটি আগের সাতটি সংস্করণের চেয়ে গুণগতভাবে একটু ভিন্ন ধরনের ছিল। তবে এই সংস্করণেও বিদেশি বিনিয়োগ কিংবা উন্মুক্ত খনন পদ্ধতি নিষিদ্ধ করা হয়নি। তবু এই সংস্করণের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো জাতীয় সক্ষমতার বিকাশ ও কয়লা উঠানোর জন্য ‘কোল বাংলা’ নামের একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানের কথা বলা হয়েছে। আবি®কৃত কয়লা রফতানির কোন সুযোগ না রাখার কথা বলা হয়। কিন্তু শাসক শ্রেণীর মধ্যে অনেকের এই কয়লা নীতিটি পছন্দ হয়নি। তৎকালীন জ্বালানি সচিব ম. তামিমের নেতৃত্বে মতিন পাটোয়ারি কয়লানীতির ইতিবাচক দিকগুলো বাদ দিয়ে নবম সংস্করণ তৈরি করে। বর্তমান সরকারের আমলে ২০০৯ সালের জুন মাসে ইউরোপীয় ‘উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা’র আর্থিক সহায়তায় যমুনা রিসোর্টে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সামনে সেই নবম সংস্করণ উপস্থাপন করা হয়। বর্তমান প্রস্তাবিত খসড়া কয়লানীতিকে বলা যেতে পারে নবম সংস্করণেরই সংক্ষিপ্ত সংস্করণ।
খসড়া নীতিতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উঠানোর বিধান থাকছেই
প্রস্তাবিত কয়লা নীতিতে কয়লা ওঠানোর পদ্ধতি সম্পর্কে ধারা ২.০ এ বলা হয়েছে- ‘ভূ-গর্ভস্থ পদ্ধতি/উন্মুক্ত পদ্ধতি অথবা একই সঙ্গে ভূ-গর্ভস্থ এবং উন্মুক্ত পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে খনি উন্নয়ন করা হবে। বিনিয়োগকারী/লীজি-কে ভূ-তাত্ত্বিক কাঠামো, ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর, ভূ-স্তরের প্রকৃতি, পুনর্বাসন ইত্যাদি বিবেচনায় রেখে পরিবেশগত সমীক্ষার আলোকে খনি ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত করে প্রস্তুতকৃত আর্থ-সামাজিক ও কারিগরী প্রতিবেদন যা সরকার কর্তৃক অনুমোদন সাপেক্ষে কয়লা উত্তোলন করা যাবে।’ এ ধারা অনুযায়ী বিনিয়োগকারী শুধুমাত্র কারিগরি এবং অর্থনৈতিকভাবে তার কাছে লাভজনক পদ্ধতি অর্থাৎ উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উঠানোর সুযোগ পাবে। উন্মুক্ত পদ্ধতিতে যেহেতু অন্য যেকোন পদ্ধতির তুলনায় একবারে অধিক পরিমাণে কয়লা ওঠানো যায়, তাই ‘কারিগরি ও অর্থনৈতিক’ বিবেচনায় বিনিয়োগকারী নিঃসন্দেহে উন্মুক্ত পদ্ধতিই বেছে নেবে।
রাখা হয়েছে আইপিপির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিধান
খসড়া নীতিতে উত্তোলিত কয়লা ব্যবহার করে সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিবর্তে ধারা ১৫.০ এ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লা উত্তোলনকারী লীজিকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রয়োজন বোধে লীজিকে সরকারি প্রতিষ্ঠানকে পাশ কাটিয়ে বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বা আইপিপি’র নিকট কয়লা বিক্রির আগাম অনুমোদন দিয়ে রাখা হয়েছে। সরকারের কাজ কেবল লীজি কর্তৃক উৎপাদিত বিদ্যুৎ ক্রয় করার নিশ্চয়তা প্রদান। ফলে প্রস্তাবিত কয়লা নীতি বাস্তবায়ন হলে গ্যাস ক্ষেত্রের মতই কয়লা ক্ষেত্রেও একই ধরনের পরিস্থিতি হবে। দেখা যাবে, সরকারি প্রতিষ্ঠান কয়লা ক্ষেত্র অনুসন্ধান করে দেবে, কিন্তু সেখান থেকে কয়লা ব্যবহার করবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
কয়লার দেশীয় চাহিদা ও রফতানি নিষিদ্ধ করার কথা উল্লেখ নেই নীতিতে
বাংলাদেশে মজুদ কয়লা চাহিদার কোন ভবিষ্যত নির্ধারণ না করে শুধুমাত্র ‘দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে লীজিকে কয়লা উত্তোলন করতে হবে’ (ধারা ২.০) কিংবা ‘দেশের ভবিষ্যৎ জ্বালানি নিরাপত্তা, বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার ক্রমবর্ধমান ব্যবহার ও কয়লার দীর্ঘমেয়াদি চাহিদা ইত্যাদি বিবেচনায় রেখে জনস্বার্থে প্রয়োজন না হলে কয়লা রফতানি করা যাবে না’ (ধারা ৬.০) এ ধরনের কথা কয়লা রফতানিরই সুুযোগ তৈরি করবে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে যদি কয়লা উঠানো হয় তাহলে রফতানির জন্য বাড়তি কয়লা থাকবে না। ২০০৮ সালে আব্দুল মতিন পাটোয়ারি কমিটি প্রণীত খসড়া কয়লা নীতিতে বলা হয়েছিল, জিডিপি বৃদ্ধির হার ৮% হয় তাহলে কয়লার প্রয়োজন হবে ৪৫০ মিলিয়ন টন কয়লা এবং এ যাবত আবি®কৃত কয়লা ক্ষেত্রগুলো ২০৩০ সালের বেশি দেশের জন্য কয়লার এই চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে না। তাই কয়লা নীতিতে রফতানির বিধান রাখার কোন সুযোগ নেই।
বিদেশি বা বেসরকারি বিনিয়োগ ও রয়্যালিটির পরিমাণ
প্রস্তাবিত কয়লা নীতি’র ধারা ১.২ এ বলা হয়েছে ‘কয়লা ক্ষেত্র আবিষ্কার ও উন্নয়নের নিমিত্তে স্ট্রাটেজিক পার্টনার/যৌথ বিনিয়োগকারী নিয়োগ করা এবং দেশী/বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার নিমিত্ত লাইসেন্সী/লীজিকে বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনা ও সুবিধাদি প্রণয়ন করা’র কথা বলা হয়েছে। ধারা ১০.০ এবং ১০.১ কয়লা অনুসন্ধান, উঠানো, বাজারজাতকরণ-সহ সকল ক্ষেত্রেই সরকারি ও বেসরকারি যৌথ বিনিয়োগ এবং প্রত্যক্ষ দেশি/বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানানোর কথা বলা হয়েছে। এর আগের কয়লা নীতির খসড়াগুলাতে রয়্যালিটি নির্ধারণের দিক নির্দেশনা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা ছিল। এবারের খসড়ায় বিনিয়োগকারীকে আকৃষ্ট করার জন্য ট্যাক্স-ভ্যাট মওকুফসহ বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা দেয়ার প্রতিশ্র“তির পাশাপাশি খনিমুখে আন্তর্জাতিক মূল্যের ৭০% হারে বিক্রির নিশ্চয়তা (ধারা ১৬.০) দেয়া হয়েছে।
নীতিতে বলা হয়নি জাতীয় সক্ষমতা বিকাশের কথা
প্রস্তাবিত কয়লা নীতিতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ব্যবহারের লক্ষ্যে কয়লা সম্পদ উন্নয়নের জন্য জাতীয় সক্ষমতা সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করা হয়েছে। কিন্তু খসড়াটির কোথাও জাতীয় সক্ষমতা অর্জনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ কয়লা উত্তোলন কোন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে, কীভাবে এবং কত দিনে অর্জিত হবে তার উল্লেখ নেই। ধারা ২১.০ এ বলা হয়েছে, ‘কয়লা তহবিলের অর্থ কয়লা অনুসন্ধানমূলক কার্যক্রম, গবেষণা ও স্টাডি, মানবসম্পদের দক্ষতা বৃদ্ধি, কয়লা খাতের মহাপরিকল্পনা ইত্যাদি কাজে ব্যবহার করা যাবে।’ এ তহবিলের সম্ভাব্য উৎস হিসেবে সরকারি অনুদানের পাশাপাশি লীজি’র নিকট থেকে প্রাপ্ত গবেষণা ও উন্নয়ন ফি এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে কয়লা তহবিলের উৎস ও তহবিল ব্যবহারের পরিকল্পনা থেকেও দেখা যায় কয়লা উঠানোর সক্ষমতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কোন প্রতিষ্ঠান স্থাপন, সেই প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ক্রয় এবং কয়লা উঠানোর প্রয়োজনীয় কারিগরি ও প্রকৌশলগত দক্ষতা সৃষ্টির জন্য মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট (বিভাগ) খোলা ইত্যাদির জন্য কোন তহবিল/পরিকল্পনা খসড়া কয়লানীতিতে রাখা হয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় গঠিত প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আবদুল মতিন পাটওয়ারীর নেতৃত্বাধীন কয়লানীতি পর্যালোচনা কমিটি তাদের রিপোর্টে বলেছিল, কয়লাসহ দেশের সকল খনিজসম্পদের মালিক রাষ্ট্র ও এদেশের জনগণ। ফলে কয়লা তুলতে হবে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানির মাধ্যমে। ‘কোল বাংলা’ নামে একটি হোল্ডিং কোম্পানি গঠন করে সেই কোম্পানির মাধ্যমে কয়লা উত্তোলনের ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু বর্তমান খসড়া নীতিতে তা উল্লেখ করা হয়নি।
কয়লা খাতে বিনিয়োগকারী নির্বাচনের ক্ষেত্রে অস্বচ্ছতার সুযোগ
প্রস্তাবিত নীতির ৯নং ধারায় বলা হয়েছে, ‘দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার স্বার্থে ও পর্যাপ্ত জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কয়লা অনুসন্ধান, উন্নয়ন, উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ এবং প্রত্যক্ষ দেশি/বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানানো হবে। তবে সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে দেশি বেসরকারি বা বিদেশি সরকারি/বেসরকারি যৌথ বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। কয়লা অঞ্চল ও দেশের কয়লা খাত উন্নয়নে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ, প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধি, খনি উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট শিক্ষা, গবেষণা, প্রশিক্ষণ এবং খনি ব্যবস্থাপনা সামর্থ্য বৃদ্ধির জন্য সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি দেশের উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তাকে স্বাগত জানানো হবে’। বিনিয়োগ সংক্রান্ত এ ধারাটি ভারসাম্যপূর্ণ। কিন্তু পরের ধারাতেই বিনিয়োগকারী নির্বাচনের ক্ষেত্রে অস্বচ্ছতার সুযোগ রাখা হয়েছে। ধারা ৯.১ এ বলা হয়েছে, ‘আবিষ্কৃত কয়লাক্ষেত্র উন্নয়নের জন্য প্রচলিত সরকারি বিধি-বিধান অনুসরণ করে প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে যোগ্যতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান নির্বাচনপূর্বক কয়লা অনুসন্ধান, উন্নয়ন, উৎপাদন এবং ব্যবহারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। যৌথ উদ্যোগে কোনো বিদেশি সরকারি প্রতিষ্ঠান কয়লা অনুসন্ধান ও উন্নয়নে আগ্রহী হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করা হবে’। এতে বুঝা যায়, বিদেশি যে কোন কোম্পানিকে বিনা প্রতিযোগিতায় কয়লাক্ষেত্র উন্নয়নের কাজ দেয়ার জন্যই ৯.১ ধারায় দ্বিতীয় অংশটি সংযোজন করা হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্তদের পূনর্বাসনের বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলা হয়নি নীতিতে
কয়লা উঠানোর ফলে যে বিপুল সংখ্যক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে তাদের পূনর্বাসনের বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে কিছু বলা হয়নি প্রস্তাবিত কয়লা নীতিতে। অধিকাংশ সময় দেখা গেছে ক্ষতিগ্রস্তরা তাদের অধিকার পায় না। তবে সরকার বলছে, ক্ষতিগ্রস্তদের পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করেই কাজ এগিয়ে নেয়া হবে। তথাপি নীতিতে এ বিষয়টিও স্পষ্ট করে উল্লেখ করা দরকার যে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যদি বেশি হয় তাহলে সরকারের সে খনি বন্ধ করে দেয়ার অধিকার থাকবে। এ ক্ষেত্রে লীজি প্রতিষ্ঠান কোন ক্ষতি দাবি করতে পারবে না।
নীতি চূড়ান্ত করার আগে যা করা দরকার
অধ্যাপক পাটওয়ারীর নেতৃত্বে গঠিত কমিটি খসড়া কয়লা নীতির অষ্টম সংস্করণ তৈরি করার সময় জুন ২০০৭ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০০৭ পর্যন্ত মোট ১৯টি উন্মুক্ত সভায় বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে। একইভাবে বর্তমান কয়লা নীতি চূড়ান্ত করার আগে বিভিন্ন শ্রেণীর-পেশার মানুষ বিশেষ করে সম্ভাব্য কয়লা খনি অঞ্চলের জনগণ, দেশীয় বিশেষজ্ঞ, বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন এর মতামত গ্রহণ করা আবশ্যক। সংগৃহীত সকলের মতামত ওয়েবসাইট ও পত্রপত্রিকায় প্রকাশ করে স্বচ্ছতার মাধ্যমে কয়লানীতি চূড়ান্ত করা দরকার।
চিন্তা, ১৩ নভেম্বর ২০১০