পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ নির্বাচন: প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

২৫ জুলাই ২০১৮ তারিখে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে পাকিস্তানের ১৩তম জাতীয় সংসদর নির্বাচন এবং দেশটির চারটি প্রদেশের প্রাদেশিক নির্বাচন। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম ও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্রে কোন দল ক্ষমতায় আসছে এনিয়ে আমাদের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। আসুন আমরা জেনে নেই পাকিস্তানের নির্বাচন পদ্ধতি, নির্বাচনের ইতিহাস এবং বর্তমান নিয়ে কিছু তথ্য-উপাত্ত।

পাকিস্তানের নির্বাচন পদ্ধতি

পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট। উচ্চকক্ষের নাম সিনেট। আর নিম্নকক্ষের নাম ‘মজলিস-ই-শূরা’ হিসেবে আখ্যায়িত।

উচ্চকক্ষ সিনেটের সদস্য সংখা মোট ১০৪ জন। প্রত্যেক প্রদেশ থেকে ১৪ জন এবং উপজাতিদের মধ্য থেকে ৮ জন নিয়ে সিনেট গঠিত, যাঁদের মেয়াদ ছয় বছর। তবে এসব সিনেট সদস্যরা সবাই একবারে নির্বাচিত হন না। অর্ধেক অর্থাৎ ৫২ জন সিনেটর নির্বাচিত হন এক সময়ে আর বাকি ৫২ জন সিনেটর তিন বছর পর নির্বাচিত হন। সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালে। মূলত প্রত্যেক প্রদেশের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্যই ১৯৭৩ সালে সিনেটের যাত্রা শুরু হয়।

পাকিস্তানের নিম্নকক্ষ ‘মজলিস-ই-শূরা’ বা জাতীয় সংসদের মোট আসন ৩৪২টি। কোনো দলের সরকার গঠনের জন্য দরকার হয় ১৭২টি আসন। ৩৪২টি আসনের মধ্যে ২৭২টিতে প্রার্থীরা নির্বাচিত হন সহজ সংখ্যাধিক্যভিত্তিক পদ্ধতি বা ‘ফার্স্ট পাস্ট দ্য পোস্ট’ অনুসারে। অর্থাৎ এই পদ্ধতিতে একটি নির্বাচনী আসনে সর্বাধিক ভোট লাভকারী (অন্যান্য প্রার্থীর তুলনায়) প্রার্থীকেই বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এতে একজন প্রার্থী সংশ্লিষ্ট আসনের মোট ভোটসংখ্যার ৫০ শতাংশের কম ভোট পেয়ে বিজীয় হতে পারেন। অন্যদিকে নারীদের জন্য ৬০টি এবং উপজাতি ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত ১০টি আসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি দল সর্বমোট যে পরিমাণ ভোট পায়, সেই অনুপাতে দলীয় তালিকায় নির্ধারিত অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে নির্দিষ্টসংখ্যক আসন বরাদ্দের (বিজয়ী) ঘোষণা প্রদান করা হয়। পাকিস্তানে ভোট দেয়ার পদ্ধতি বহুলাংশেই বাংলাদেশের মতো। তবে সেখানে নির্বাচন শুরু হয় ৮.০০টায়, শেষ হয় সন্ধা ৬.০০টায়।

জাতীয় সংসদের আসন ভাগ করা হয়েছে এভাবে: রাজধানী ইসলামাবাদে ৩টি আসন, এছাড়া পাঞ্জাব প্রদেশে ১৪১টি, সিন্ধ প্রদেশে ৬১টি, খায়বার পাখতুন প্রদেশে ৩৯টি, বেলুচিন্তান প্রদেশে ১৬টি, কেন্দ্র নিয়ন্ত্রিত উপজাতিদের জন্য ১২টি আসন।

চারটি প্রাদেশিক নির্বাচনে পাঞ্জাব প্রদেশের আসন সংখ্যা ২৯৭টি, সিন্ধা প্রদেশে ১৩০টি, খায়বার পাখতুন প্রদেশে ৯৯টি এবং বেলুচিন্তান প্রদেশে ৫১টি আসন রয়েছে।

নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রেক্ষাপট ও কার্যাবলী: পাকিস্তানের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদগুলোর নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্বে থাকে একটি স্বাধীন ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, যার নাম ইলেকশান কমিশন অব পাকিস্তান। ১৯৫৬ সালে জারি করা শাসনতন্ত্রের ১৩৭নং ধারা অনুসারে ১৯৫৬ সালের ২৩ মার্চ পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট কর্তৃক নিয়োজিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং চারজন সদস্য নির্বাচন কমিশনারের সমন্বয়ে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন গঠিত হতো। ১৮তম সংশোধনীতে এই নিয়োগ-পদ্ধতির পরিবর্তন করা হয়েছে। ওই সংশোধনীর পর থেকে সরকারি ও বিরোধীদলীয় সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত একটি সংসদীয় কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কশিনার ও কমিশনের সদস্যদের নিয়োগ দেয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টে কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের মধ্য যাঁরা সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার যোগ্য, তাঁদের মধ্য থেকেই সিইসি নিয়োগ করা হয়। নির্বাচন কমিশনের অপর চারজন সদস্য, অর্থাৎ নির্বাচন কমিশনারদের একেকজনকে পাকিস্তানের একেকটি প্রদেশের হাইকোর্টের বিচারপতিদের মধ্য থেকে নিয়োগ করা হয়ে থাকে।

পাকিস্তানের সংসদ নির্বাচনের ইতিহাস:

আমরা জানি, ১৯৪৭ সালে বৃটিশ শাসনমুক্ত হয়ে ভারত ও পাকিস্তান একসঙ্গে স্বাধীনতা লাভ করে। কিন্তু দেখা যায়, ভারত নিরবিচ্ছিন্নভাবে গণতন্ত্রের পথে হাঁটলেও ব্যতিক্রম দেখা যায় পাকিস্তানের ক্ষেত্রে। ভারত ১৯৫০ সালেই তার শাসনতন্ত্র পাস করে এবং ১৯৫২ সালে দেশটিতে প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকায় ভারতের গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছে। অন্যদিকে দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার একবছরের মধ্যেই ১৯৪৮ সালে দেশটির স্থপতি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর মারা যান এবং ১৯৫১ সালে পাকিস্তানের সামরিক ও বেসামরিক আমলাদের ষড়যন্ত্রে প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান রাওয়ালপিন্ডির এক জনসভায় গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান। এরপর থেকেই সামরিক-বেসামরিক আমলাদের কর্তৃত্ব পাকিস্তানে প্রতিষ্ঠিত হয়।

চৌধুরী মুহম্মদ আলী যখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী তখন বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। তাঁদের দুজনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৫৬ সালে একটা শাসনতন্ত্র পাস হয়। এরপর সার্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে ১৯৫৪ সালে পাকিস্তানে প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

১৯৫৬ সালের শাসনতন্ত্রের ভিত্তিতে ১৯৫৯ সালে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্বাচনের পূর্বেই ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মির্জা সংবিধান স্থগিত করে মার্শাল ল’ জারি করেন। আর তার মাত্র ২০ দিন পর ২৭ অক্টোবর জেনারেল আইয়ুব খান সামরিক শাসন জারি করে মির্জাকে ক্ষমতাচ্যুত করেন।

প্রেসিডেন্ট জেনারেল আইয়ুব খান ১৯৬২ সালে মঞ্জুর কাদেরকে দিয়ে একটা শাসনতন্ত্র রচনা করান এবং সেই বছরেই তিনি প্রথম ‘হ্যাঁ-না’ ভোটের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট হন। ১৯৬২ সালের শাসনতন্ত্রের প্রত্যক্ষ ভোটের প্রথা রহিত করে বেসিক ডেমোক্রেসি বা ‘ইলেকক্ট্রোরাল কলেজ’ প্রথা সৃষ্টি করে ইলেক্ট্রোরাল কলেজের ৮০ হাজার সদস্যের মাঝে ভোটদানের অধিকার সংরক্ষিত করে ফেলেন। ১৯৬২ সালে এই ৮০ হাজার ভোটারই মানে মৌলিক গণতন্ত্রী হিসেবে পরিচিত ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ভোটের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ও জাতীয় এবং প্রাদেশিক সংসদের সদস্যদের নির্বাচিত করেন। মানে দ্বিতীয়বারের মতো পাকিস্তানে ইনডাইরেক্ট বা অপ্রত্যক্ষ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

১৯৬৯ সালে আইয়ুবের বিরুদ্ধে ব্যাপক গণআন্দোলনের ফলে তার পতন হয়। জেনারেল ইয়াহিয়া সামরিক শাসন জারি করে প্রেসিডেন্ট হন। তিনি ১৯৬২ সালের আইয়ুবের শাসনতন্ত্র রহিত করেন এবং ‘লিগ্যাল ফ্রেইম অর্ডার’-এর অধীনে ১৯৭০ সালের নির্বাচনের আয়োজন করেন। পাকিস্তান জাতীয় সংসদের সদস্য সংখ্যা ছিল ৩০০ জন। পূর্ব-পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) সংখ্যানুপাতে ৫৬ শতাংশ আর পশ্চিম পাকিস্তানে ৪৪ শতাংশ।

১৯৭০ সালের প্রথমবারের মতো প্রত্যক্ষ ভোট অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায়। কিন্তু তার পরও প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হন্তান্তর না করে পূর্ব পাকিস্তানে ২৫ মার্চ রাতে নিরীহ বাঙালির ওপর গণহত্যা শুরু করে। এরপর ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়।

মুক্তিযুদ্ধ শেষে পিপলস পার্টির জুলফিকার আলী ভুট্টো পাকিস্তানের চতুর্থ প্রেসিডেন্ট হন। তিনিও একটা শাসনতন্ত্র রচনা করেন, যা ১৯৭৩ সালে গৃহীত হয়। নতুন শাসনতন্ত্র প্রণয়ন হওয়ার পর ভুট্টো পাকিস্তানের নবম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন। ১৯৭৭ সালে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির কারণে বিরোধী দল নির্বাচনী ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে এবং মাওলানা মুফতি মাহমুদের নেতৃত্বে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে ওঠে। এরকম গণঅসন্তোষ দেখিয়ে ১৯৭৭ সালের ৫ জুলাই সেনাপ্রধান জেনারেল জিয়াউল হক দেশে সামরিক শাসন জারি করেন এবং ভুট্টোকে ক্ষমতাচ্যুত করেন এবং প্রেসিডেন্টের পদে আসীন হন।

১৯৭৯ সালে নবাব মোহাম্মদ আহমদ কাসুরিকে হত্যার হুকুমের আসামি হিসেবে ভুট্টোকে অভিযুক্ত করা হয় এবং তাঁকে ফাঁসি দেয়া হয়। জেনারেল জিয়াউল হক ১৯৮৮ সালের ১৭ আগস্ট বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন। এর আগে ১৯৮৫ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া ১৯৮৮, ১৯৯০, ১৯৯৩, ১৯৯৭ সালে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

১৯৯৯ পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি করেন এবং ক্ষমতাসীন জেনারেল পারভেজ মোশাররফ। কারগিল যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে তিনি মুসলিম লীগ নেতা নওয়াজ শরীফকে ক্ষমতাচ্যুত করেন। মার্শাল ল’ জারি করে এবং সংবিধান স্থগিত রেখে ২০০২ সালে একটি সাধারণ নির্বাচন দেন মোশাররফ এবং নিজের গড়া একটি দলকে ক্ষমতায় আনেন তিনি।

দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের মতে, সে নির্বাচন ছিল শান্তিপূর্ণ, কিন্তু সাজানো নির্বাচন। ১৯৯৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে নওয়াজ শরীফ সৌদি আরবে নির্বাসনে ছিলেন, আর পিপলস পার্টির নেত্রী বেনজির ভুট্টো নির্বাসিত ছিলেন আরব আমিরাতে। ২০০৭ সালে আমেরিকার মধ্যস্থতায় বেনজির, নওয়াজ শরীফ পাকিস্তানে ফিরে আসেন এবং মোশাররফের ঘোষিত সাধারণ নির্বাচনে অংশ  নেন। সামরিক শাসন প্রত্যাহার করা হয় ১৫ ডিসেম্বর ২০০৭। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারের সময় ২৭ ডিসেম্বর রাওয়ালপিন্ডির এক জনসভায় পিপিপি নেত্রী বেনজির ভুট্টোকে গুলি করে হত্যা করা হয়। বেনজিরের হত্যার কারণে ১৮ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং নির্বাচনে পাকিস্তান পিপলস পার্টি-পিপিপি জয়লাভ করে। বেনজির ভুট্টোর স্বামী আসিফ আলী জারদারি প্রেসিডেন্ট ও পিপিপি নেতা সৈয়দ ইউসুফ রাজা গিলানি প্রধানমন্ত্রী হন। কিন্তু নানা অজুহাতে গিলানির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই তাঁকে অপসারণ করা হয়, অবশ্য সে সরকার প্রথমবারের মত তার মেয়াদ পূর্ণ করে।

২০১৩ সালের নির্বাচনে নওয়াজ শরীফের মুসলিম লীগ জয়লাভ করে এবং নওয়াজ প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হন। কিন্তু ২০১৭ সালে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট নওয়াজ শরিফকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অযোগ্য ঘোষণা করে। এরপর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল) এর নেতা শাহিদ খাকান আব্বাসী।

পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০১৮

আজকে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে এটি পাকিস্তানের ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনে ৩৪২টি আসনের বিপরীতে ৩,৪২৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন ১০৫,৯৫৫,৪০৯ জন ভোটার।

ধারণা করা হচ্ছে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তিনটি দলের মধ্যে — নওয়াজ শরীফের মুসলিম লীগ, ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি এবং সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ-পিটিআই এর মধ্যে। আবার সিন্ধুতে মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট এবং সীমান্ত প্রদেশে জমিয়তে ওলামার আঞ্চলিক ভিত্তি রয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিগত কয়েক বছর ইমরান খান ‘পাকিস্তান আওয়ামী তেহরিক’ প্রধান তাহির-উল-কাদেরীকে সঙ্গে নিয়ে নওয়াজ শরীফের সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন পরিচালনা করে আসছিলেন। তবে সেনাবাহিনীর পরোক্ষ সমর্থনেই ইমরান খান উক্ত আন্দোলন পরিচালনা করেছে বলে অনেকেই মনে করছেন।

অনেকে বলছেন, এবার ইমরানের দল পিটিআই ভালো ফল করবে। অবশ্য জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে, নওয়াজ শরীফের মুসলিম লীগ এখনও জনপ্রিয়, বিশেষ করে পাঞ্জাবে। জাতীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাঞ্জাবেই।

তবে ‘ডন’ পত্রিকার এক জনমত জরিপে অংশগ্রহণকারী ৮৩% মানুষ মনে করেন, এবার নির্বাচনে ইমরান খানের দল পিটিআই জয়ী হবে। ১২ শতাংশ লোক মনে করেন নওয়াজ শরীফের দল পিএমএল-এন জয়ী হবে। এছাড়া পিপিপি’র পক্ষে মাত্র রয়েছে ১ শতাংশ লোক।

বেশিরভাগ জনমত জরিপ বলেছে, নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। ফলাফল এমন হতে পারে যে জোট সরকার তথা কোয়ালিশন সরকার গঠনের প্রয়োজন হবে। সে ক্ষেত্রে ক্ষমতার ভারসাম্যে বিলাওয়াল অন্যতম ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারেন। অর্থাৎ মুসলিম লীগ (নওয়াজ) এবং পিপলস পার্টির মধ্যে কোয়ালিশন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কওমি মুভমেন্ট ও জমিয়ত তখন তাদের অনুগামী হবে।

অনেকেই মনে করেন, নির্বাচনের অন্তরালে প্রধান নিয়ন্ত্রক হিসেবে থাকবে সেনাবাহিনী। ইমরান খানই হতে পারেন তাদের পছন্দের লোক। গত ১০ বছর ধরে সেনাবাহিনী ক্ষমতায় নেই, তাই অনেকে মনে করেন ইমরান খানের সাথে একধরনের আপোষের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে ক্ষমতার অংশীদার হতে চাইবে দেশটির সেনাবাহিনী।

প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০১৮

Leave a Reply

Your email address will not be published.