জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৮: কেমন ইশতেহার পেলাম

রাষ্ট্র পরিচালনার নীতিগত বিষয়গুলো নিয়ে নির্বাচনী বিতর্কের সংস্কৃতি বাংলাদেশে অনেকটাই অনুপস্থিত। যদিও ১৯৯০ সালের পর প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রতিটি দলই জনগণের সামনে ইশতেহার ঘোষণা করে, যা বর্তমানে নির্বাচনের একটা গুরুত্বপূর্ণ পর্ব হিসেবে বিবেচিত হয়। এর মাধ্যমে দলগুলো ক্ষমতায় গিয়ে কী করবে তার একটি আভাস পাওয়া যায়।

আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো তাদের ইশতেহার প্রকাশ করেছে। ইশতেহার প্রকাশের আগেই আমরা ‘সুজন’-এর পক্ষ থেকে নাগরিক প্রত্যাশা তুলে ধরেছিলাম। ইশতেহার প্রকাশের পর আমাদের প্রত্যাশার আলোকে আমরা ইশতেহারগুলো পর্যালোচনা করেছি। সেই পর্যালোচনা তুলে ধরার জন্য ‘সুজন’-এর পক্ষ থেকে আজ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয় এবং সেই পর্যালোচনা বা মূল্যায়ন উপস্থাপন করা হয়। ইশতেহারগুলোতে লক্ষণীয় যে বৈশিষ্ট্যগুলো আমরা পেয়েছি তা হলো:
১) মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ: যে কয়টি রাজনৈতিক দলের ইশতেহার মূল্যায়ন করার সুযোগ আমরা পেয়েছি, তার প্রতিটিতেই আমরা দেখি প্রত্যেক্ষ বা পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ এবং মূলনীতির প্রতি শ্রদ্ধা ও মর্যাদা প্রদর্শন করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বলতে কোন দল কী বোঝায় সেটা ¯পষ্ট না হলেও, এই বিষয়টির স্বীকৃতি তাৎপর্যপূর্ণ।
২) ঐকমত্যের ক্ষেত্র: রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দৃশ্যত অনেক বৈরিতা ও মতপার্থক্য থাকলেও ইশতেহারে আমরা দেখি বেশকিছু বিষয়ে তাদের মধ্যে মতৈক্যও রয়েছে। বিশেষ করে নতুন সরকারকে কোন কোন ক্ষেত্রে জোর দিতে হবে তা নিয়ে সর্বজনীন বিষয়ে বেশিরভাগ দলকেই আমরা একই রকম অবস্থানে দেখি Ñ যেমন, গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রে বৈষম্য নিরসন, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক বিকেন্দ্রীকরণ, দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদ দমন, জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবিলা, তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি ইত্যাদির গুরুত্ব প্রায় সকল রাজনৈতিক দলই স্বীকার করে।
৩) তরুন ভোটারদের আকর্ষণের চেষ্টা: তরুণ ভোটারদের মন জয় করার জন্য প্রায় সবগুলো দলকেই যতœবান হতে দেখা গেছে। শুধুমাত্র এই নির্বাচনেই নয়, ভবিষ্যতে দলের রাজনৈতিক কর্মকা-ে তরুণ সমাজকে পাশে নেয়ার বিকল্প নেই। তরুণদের গুরুত্ব যে সব রাজনৈতিক দলই উপলব্ধি করছে সেটাই ইশতেহারেই ফুটে উঠেছে। এক্ষেত্রে জনমিতিক সুবিধা (ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড) কাজে লাগানো (আওয়ামী লীগ, পৃষ্ঠা ২৭) এবং তরুণদের দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর (আওয়ামী লীগ, পৃষ্ঠা ৩১), তরুণদের কর্মসংস্থান (ঐক্যফ্রন্ট, দফা ৬), তরুণদের জন্য ‘ইয়ুথ পার্লামেন্ট’ গঠন (বিএনপি, পৃষ্ঠা ৪) ইত্যাদির কথা উল্লেখ করা যায়।
৪) রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিষয়ে মূল্যায়ন: প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ স¤পর্কে যে সমালোচনা ইশতেহারে দেখা গেছে তাতে কিছুটা গৎবাধা প্রবণতারই পুনরাবৃত্তি হয়েছে। দেশের উন্নয়নে পক্ষ বিপক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর গঠনমূলক সমালোচনা এবং উপযুক্ত ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষের ভাল কাজের মূল্যায়ন এবারের ইশতেহারেও দেখা যায়নি। এই ক্ষেত্রে রাজনীতির মেরুকরণের লক্ষণও জোরালো। ইশতেহারে শরিক অথবা প্রতিপক্ষ দলের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে নির্মোহ মূল্যায়ন অনুপস্থিত। আমরা আশা করব আস্তে আস্তে রাজনৈতিক দলগুলো নির্মোহ ও গঠনমূলক মূল্যায়ন ও সমালোচনার সংস্কৃতি সৃষ্টি করবে। তবে এক দলের শাসনামলে গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্প অন্য দলের শাসন কালে সমাপ্ত নাও হতে পারে এরকম শঙ্কার লাঘব করতে বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে উন্নয়ন প্রকল্পের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।
৫) জাতীয় ঐক্যের সম্ভাবনা: কোন কোন রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে প্রতিহিংসার পথ বর্জন করে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা (ঐক্যফ্রন্ট), ভয়মুক্ত বাংলাদেশ তৈরি (গণসংহতি আন্দোলন), প্রতিহিংসামুক্ত ও সহমর্মী বাংলাদেশ, এবং সহিষ্ণুতার সংস্কৃতি গড়ে তোলা (বিএনপি), শান্তি ও সহাবস্থানের রাজনীতি প্রবর্তন (জাতীয় পার্টি, ১৩ তম দফা) ইত্যাদি ইতিবাচক বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে। দেশের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির উন্নয়ন ঘটানোর ক্ষেত্রে এগুলো ইতিবাচক উদাহরণ।
৬) রাজনৈতিক মতাদর্শ ও রাষ্ট্রের ভূমিকা: বাম রাজনৈতিক দলগুলো ছাড়া অন্যান্য রাজনৈতিক দল বা জোটগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক আদর্শ স¤পর্কে তেমন কোনো উল্লেখ দেখা যায় না। একটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, আজকের দিনে বিশ্বায়ন এবং বাজার অর্থনীতির প্রসারের কারণে অনেক প্রচলিত মতাদর্শ গুরুত্ব হারিয়েছে বা সেগুলোকে নতুন আঙ্গিকে ব্যাখ্যা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তা সত্ত্বেও বাজার ব্যবস্থার সুবিধা দেশের মানুষের কাছে যথাযথভাবে পৌঁছে দিতে এবং বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এবং তার সুবিধাগুলো উন্নয়নে কাজে লাগাতে রাষ্ট্রের ভূমিকা কী হবে সে স¤পর্কে রাজনৈতিক দলগুলো আরও গতিশীল চিন্তা ও আলোচনায় অংশ নেবে বলে আমরা আশা করেছিলাম।
৭) রাজনৈতিক দলগুলোর বিশেষ অগ্রাধিকার: কোনো কোনো ইশতেহারে রাজনৈতিক দলগুলো এবারের নির্বাচনে তাদের বিশেষ অগ্রাধিকার বা অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করেছে। আওয়ামী লীগের ইশতেহারে দুইটি বিশেষ অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে; সেগুলো হলো: ১) গ্রামে নগর সুবিধার সম্প্রসারণ; ও ২) যুবসমাজকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর; এছাড়াও ১৯টি ক্ষেত্রকে বিশেষ অঙ্গীকার হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে (পৃষ্ঠা ৫)। ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারের ৩৫টি অঙ্গীকারের ভেতর কোনোটিকে বেশি বা কম গুরুত্ব তা বলা হয়নি। কিন্তু ঐক্যফ্রন্ট গঠনের মূল উদ্দেশ্য হিসেবে জনগণের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারের কথা বলেছে। অন্যদিকে ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শরিক দল বিএনপি তাদের পৃথক ইশতেহারে উন্নত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার উপর জোর দিয়েছে। এছাড়া প্রতিহিংসামুক্ত এবং সহমর্মী নির্বাচন ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতিও তাদের ইশতেহারে রয়েছে। জাতীয় পার্টি দেশের সকল ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়া আনা, সুষ্ঠু গণতন্ত্রের বিকাশ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়েছে। সিপিবির ইশতেহারে আলাদা করে বিশেষ অঙ্গীকার উল্লেখ নেই, কিন্তু ইশতেহারের শিরোনামে ‘শোষন-বৈষম্যহীন ইনসাফের সমাজ’ গড়ার কথা তাৎপর্যপূর্ণ।
৮) বিকেন্দ্রীকরণ ও স্থানীয় সরকার: বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকেই বিকেন্দ্রীকরণের গুরুত্ব স¤পর্কে এক ধরনের ঐকমত্য ছিল। কিন্তু কার্যকর স্থানীয় সরকারব্যবস্থা এখনো গড়ে উঠেনি। ফলে এখনো প্রতিটি ইশতেহারেই বিকেন্দ্রীকরণ স¤পর্কে প্রতিশ্রুতি রয়েছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, সিপিবি ও ঐক্যফ্রন্ট এই সব দলের ইশতেহারেই স্থানীয় সরকারের জন্য বাজেট বৃদ্ধি করার কথা বলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের ইশতেহারে গত দুই মেয়াদের শাসনামলে গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে। এই ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি এককেন্দ্রিক শাসন ব্যবস্থার স্থানে প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়েছে। এছাড়া জাতীয় পার্টির ইশতেহারে ঢাকা শহর থেকে ৫০% সদর দফতর প্রাদেশিক রাজধানীতে স্থানান্তরের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে ‘সিটি গভার্নমেন্ট’ সৃষ্টি, ঢাকার আশেপাশে কিছু শহর সৃষ্টি এবং স্থানীয় সরকারের ওপর দলীয় রাজনীতির প্রভাব কমাতে দলীয় প্রতীক নিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রথা বাতিলের মত বেশ কিছু কার্যকর পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে।
৯) বৈষম্য নিরসন: এবারের ইশতেহারগুলোর একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বৈষম্য নিরসনের বিষয়টিকে সকলেই বেশ গুরুত্বের সাথে আমলে নিয়েছে। বাংলাদেশে গড় আয় এবং জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও অর্থনৈতিক বৈষম্য যেরকম উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে তাতে ইশতেহারে এই বিষয়টির গুরুত্ব পাওয়া বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এই প্রসঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত বিভিন্ন পন্থার ভেতরে উল্লেখযোগ্য হলো সামাজিক সুরক্ষাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা হ্রাস, গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধার সম্প্রসারণ (আওয়ামী লীগ, পৃষ্ঠা ৩০, ৩৭, ৩৮), সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীকে শক্তিশালী করা, রেশনিং (ঐক্যফ্রন্ট ১৯তম দফা)। এছাড়াও জাতীয় পার্টির ইশতেহারে পল্লী রেশনিং এর বিষয়ে বলা হয়েছে।
১০) প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ইশতেহার?: কোন দেশের বা সমাজের অগ্রগতির একটি গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি হচ্ছে এর প্রান্তিক ও দুর্বল জনগোষ্ঠীর প্রতি এর সংখ্যাগরিষ্ঠ ও শক্তিশালী মূলধারার আচরণ। এর আলোকে মোটা দাগে এবারের ইশতেহারগুলোতে নানা মাত্রায় বিভিন্ন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুরক্ষার বিষয়টি এসেছে। এরমধ্যে রয়েছে প্রতিবন্ধী, অটিস্টিক শিশু, প্রবীণ কল্যাণ, হিজড়া, হরিজন ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন, পার্বত্য ও অনান্য অঞ্চলের নানা নৃ-গোষ্ঠীদের সমান অধিকার, মর্যাদা ও সুযোগ সৃষ্টি, (আওয়ামী লীগ পৃষ্ঠা ৬০-৬১ এবং ৬৫-৬৬), বয়োঃবৃদ্ধদের জন্য সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি (ঐক্যফ্রন্ট, দফা ২০), নারীর নিরাপত্তা ও ক্ষমতায়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা (ঐক্যফ্রন্ট, দফা ২০, ২১, ২৯), আবাসন, পেনশন ফান্ড ও রেশনিং ব্যবস্থা প্রবর্তন (বিএনপি, পৃষ্ঠা ৮)।
১১) কর্মপরিকল্পনার অনপুস্থিতি: অতীতের ন্যায় নির্বাচনী ইশতেহার যেন নিতান্তই কথার ফুলঝুরিতে পরিণত না হয়, সে লক্ষ্যে আমরা আশা করেছিলাম যে, দলগুলো তাদের ইশতেহারে ইশতেহার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি কর্ম-পরিকল্পনা তৈরি করবে। অর্থাৎ ইশতেহারের আলোকে এবং এসডিজি, পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ও দলের ভিশনকে বিবেচনায় নিয়ে প্রথম ১০০ দিনে কী করবে, প্রথম বছর কী করবে, দ্বিতীয় বছর কী করবে, তৃতীয় বছর কী করবে, চতুর্থ বছর কী করবে এবং শেষ বছর কী করবে এবং দীর্ঘমেয়াদে অর্জন করা যাবে এমন সংখ্যাগত ও গুণগত টার্গেট নির্ধারণ করে একটি কর্ম-পরিকল্পনা তৈরি করা। আমরা মনে করি, এভাবে একটি খসড়া কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করলে, দলগুলোর নিজেদের সময়ভিত্তিক অগ্রাধিকার স্থাপন সহজ হতো। কিন্তু এবারের ইশতেহারগুলোতে আমরা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে সে রকম কোনো বিশদ কর্মপরিকল্পনা পাইনি।
পরিশেষে, ইশতেহারে প্রতিবারের মতো এবারও প্রতিপক্ষের ব্যর্থতাকে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের সার্থকতা হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এগুলো ছাপিয়ে গেছে ইশতেহারের বেশ কিছু ইতিবাচক দিক, যেমন: ইশতেহারে অনেক ক্ষেত্রে ঐকমত্য, রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে ঐক্যের সম্ভাবনা, বিকেন্দ্রীকরণ ও বৈষম্য নিরসনের প্রতিশ্রুতি এবং প্রান্তিক ও অবহেলিত গোষ্ঠীবান্ধব দৃষ্টিভঙ্গি। এই ইতিবাচক দিকগুলোই আগামী দিনে গণতন্ত্রের সুদৃঢ় বুনিয়াদ সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু সেটা তখনি সম্ভব হবে যখন রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের পরও ইশতেহারে দেয়া অঙ্গীকারগুলোকে মনে রাখবে।
ইশতেহার নিয়ে কথা বলতে গেলে একটি কথা না বললেই নয়। সেটি হলো নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলের ভেতরে ইশতেহার নিয়ে যতটা উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যায়, নির্বাচনের পর এ নিয়ে তারা ততটাই উদাসীন হয়ে পড়ে। তবু দেশের নাগরিকরা আশাবাদী হয় এবং ভোট দেয়। নাগরিকদের প্রত্যাশার কথা মনে রেখে ভবিষ্যতে যারা সরকার গঠন করবেন এবং যেসব দল বিরোধী দল হিসেবে ভূমিকা রাখবেন তারা ইশতেহারে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতির কথা ভুলে যাবেন না বলে আমরা আশা রাখি। একইসঙ্গে আমরা আশা রাখি যে, ভোটাররাও দলগুলোকে তাদেরকে প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে দায়বদ্ধ করবেন।

প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮

Leave a Reply

Your email address will not be published.