মাতৃভাষা বাংলাভাষা
মাতৃভাষা বাংলাভাষা
হৃদয়ের সব ভালোবাসা,
প্রানের চেয়ে প্রিয় ভাষা
মাতৃভাষা বাংলাভাষা।
এই ভাষাতেই কথা বলি
এই ভাষাতেই সবাই লিখি,
কৃষক শ্রমিক কামার-কুমার
বাংলা সবার বুলি।
মাতৃভাষা বাংলাভাষা
এই ভাষাতেই সকল আশা,
প্রানের চেয়ে প্রিয় ভাষা
মাতৃভাষা বাংলাভাষা।
স্বাধীনতা মানে
স্বাধীনতা মানে মুক্তির রক্তিম সূর্য্য
পূর্ণিমার চাঁদের চাইতে উজ্জ্বল।
স্বাধীনতা মানে শত
শহীদের অন্তিম স্বপ্ন,
রক্ত দিয়ে লেখা নাম।
স্বাধীনতা মানে ছেলে হারা
মায়ের চোখের জল,
স্বাধীনতা মানে
মুক্তি পাগল মানুষের জান্নাত
সুন্দর, সোনালী ভবিষ্যত।
অজানা খুশির আবেশ
স্নিগ্ধতার আবেশে মুগ্ধ আমি
তাকিয়ে রই প্রকৃতির প্রহরে।
মনের গভীর থেকে
কোন এক অজানা সত্তা
বলে ওঠে, ধন্য তুমি ধন্য।
সোনালী পাখির ডানায় ভর করে
উড়ে চলি, দুর আকাশে।
ঠিকানা কোথায় জানি না।
পাখিরা স্বাগত জানায় আমায়
স্নিগ্ধ বাতাসের প্রলেপ
মেখে দেয় গায়ে।
মাঝে মাঝে সমুদ্রের
জোয়ারের মত ছুটে চলি।
শিশির নয়,
মুক্ত ছড়ানো ঘাসের মত।
হেসে চলি ঝর্ণার মত অবিরাম।
জানি না কোন আবেশে মুগ্ধ আমি
মন হয়তো জানে।
সুন্দর একটি মন
গভীর রাত
ঘুম ভেঙ্গে গেল হঠাত,
চেষ্টা করলাম আবার ঘুমাবার,
কিন্তু ঘুম যে কোন দেশে
পালিয়েছে কেন জানে?
চলে গেলাম বাসার ছাদে
পূর্নিমার আভায় ভরা চারদিক,
আকাশের পানে তাকাতেই
মনে খুশির ঝিলিক দিয়ে উঠলো।
আমি তখন চাঁদের ভিতর
কোন এক সূখপাখি খুঁজে বেড়াচ্ছি।
কি যেন এক সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি,
হ্যাঁ, চাঁদের আলোর মত
নির্মল সুন্দর একটি মন।
বহুরূপী মন
ফুলে ফুলে সুশোভিত
এক অপরুপ দৃশ্য,
চারদিকে মহা আনন্দের বন্যা
সে আনন্দে রঙ্গীন আমি।
বিশ্বাস আর স্বচ্ছতায়
আমার অন্তর বিকশিত।
সুখ পাখিগুলো আনন্দে
ডানা মেলে উড়ছে সমীরণে।
মন কামনা করছে
অপরুপ দৃশ্য দেখার।
কিন্তু না!
আকাশ হয়ে গেল মেঘাচ্ছন্ন
বিকট শব্দের বজ্রধ্বনি,
অন্তর কেঁপে উঠছে ক্ষণেক্ষণে
চারদিক ছেয়ে গেছে অন্ধকারে।
কিছুই অবলোকন করতে পারছি না
মনে হচ্ছে, আমি আমার মধ্যে নেই।
অসার স্বপ্ন
নীলিমার প্রান্তরে উড়ন্ত বলাকা
ঠিকানা বহুদুর,
ডানা দুটি মেলে দিয়ে
উড়ছে সমীরণে।
গন্তব্যের শেষ ঠিকানা জানে না।
ক্লান্তির আভা নেই কোনো,
স্বপ্ন তার অসীম।
প্রকাশভাবে দীপ্ত।
সেই চেতনা বাসনা কি
আদৌ মানুষ লালন করে?
সসীমকে অসীম মনে করে
অলক্ষ্যে হাতড়ে বেড়ায়।
স্বপ্ন দেখাটাই সার।
যেতে পারে না সীমানার কাছাকাছি।
ভেঙে পড়ে অজানা বাস্তবতায়।
দৃশ্যহীন অসীম শক্তির নিকট বাঁধা,
ছেড়া যায় না সহজে, দূর্লংঘনীয়।
বেদনার নীলচোখ
দৃষ্টির প্রসারতা কখনো স্বল্প
প্রহরে তাকিয়ে থাকি,
কখনো বেদনার নীলচোখ
করুণ থেকে করুণ হয়ে ওঠে।
মানুষেরা জানে না, বুঝে না,
কোন বেদনায় ভারাক্রান্ত।
জীবনের ঘোলাটে মেঘগুলো
কষ্টকর হয়ে ওঠে।
জীবনের স্বাদ পেতে চায় সবাই
পায় বা কজন,
কখনো কখনো ভেঙে পড়ে
বুঝতে পারে না জীবনকে
কষ্ট শুধু কষ্টই পায়।
হতভাগা ছেলেটি
তাকিয়ে রইল ছেলেটি
কিছু চাইছে বোধহয়,
শুকনো মুখখানার দিকে তাকিয়ে রইলাম,
কয়েকদিন পেটে কিছু পড়েনি।
মনে প্রশ্ন জাগে,
পৃথিবীর মানুষগুলো এত নিষ্ঠুর কেন?
কেউ প্রাসাদে প্রমোদ করে,
কেউ ডাস্টবিনে খাবার খোঁজে।
যাক সে কথা, দেখি-
ওকে কিছু দিতে পারি কি না,
বিশ টাকার একটা নোট
গুজে দিলাম ছেলেটির হাতে।
কৃতজ্ঞ দৃষ্টিতে রইল তাকিয়ে,
যেন বলতে চাইতে
আপনার এ ঋণ শোধ হবার নয়।।
ছালাবস্তার মানুষেরা
তালপাতা আর ছালাবস্তা দিয়ে তৈরি
ছোট্ট একটা ঝুপড়ি, থাকে ওরা সাতজন।
পাশেই বিরাট এক নালা
দম বন্ধ হয়ে আসে গন্ধে।
মূর্খ সবাই, অক্ষরজ্ঞান সেই কারো।
দিনে আনে দিনে খায়,
মজুদ থাকে না কিছু।
মাঝে মাঝে উপোস থাকে,
বিবাদে জড়িয়ে পড়ে এক অপরে।
নেই হাসি নেই সুখ
দু:খই তাদের সাথী।
নদীর কাছে জিজ্ঞাসা
ও নদী! কেন অবিরাম বইছো?
কেনই বা বাধভাঙ্গা
ছুটে চলছো জোয়ারের মত?
তোমার বুকে এই স্রোত কেন?
কেন তুমি থামছো না?
তুমি আমার কথা শুনছো না?
তোমার কি অনুভুতি নেই?
হ্যাঁ না একটা কিছু বলো
নাকি তাও বলবে না।
প্রলাপ
আমার চিন্তা চেতনা হারিয়ে গেছে
ক্ষয়ে গেছে দৃষ্টিশক্তি,
কেন?
তার উত্তর বলবো কি?
হ্যাঁ, শুনুন তবে,
সত্যি শুনবেন?
হ্যাঁ। তাহলে বলছি।
নাহ, বলতে পারছি না,
কেন যেন আমার বাকশক্তি
রুদ্ধ হয়ে গেছে,
দু:খিত আমাকে ক্ষমা করুন।
অতীত স্মৃতি
ক্ষনিকের ভাবনায় ছেদ পড়ে
বাস্তবে ফিরে আসি,
অতীতের স্মৃতিগুলো বারবার
মনে পড়ছে আজ।
সেদিনের সেই পথেঘাটে
দিকবিদিক ঘুরে বেড়ানো।
আনন্দের পায়রাগুলো নীল আকাশে
মুক্ত ছিল সেদিন।
সেই পাখির ডাকে আর
আমার ঘুম ভাঙে না,
প্রকৃতিকে দেখার জানার
সুযোগ আর হয় না।
মাঝে মাঝে সুদুর আকাশে
চেয়ে থাকি অবিরত।
দৃষ্টির সীমা কখনো
অস্পষ্ট হয়ে ওঠে।
মন চলে যায় বারবার
অতীতের ঠিকানায়, দূর্বিনীত।
নারী
নারী মাঝে মাঝে সুহাসিনী
কখনো আবার অভিমানী।
নারী মাঝে মাঝে উত্তাল জোয়ার
কখনো আবার নিস্তব্দ পাথর।
নারী মাঝে মাঝে জীবন সঞ্জিবনী
কখনো আবার ছলনাময়ী।
নারী মাঝে মাঝে একান্ত কাছের
কখনো আবার দূরের বহু দূরের।
হৃদয়ের যত কথা
এ হৃদয়ে আজ বহু কথা আছে
তবে বলবো না আমি কারো কাছে।
মনের দু:খ মনেই থাক,
আমি বলবো না, আমি বলবো না।
এ হৃদয়ের যত প্রাপ্তি,
পেয়ে গেছি আজ আমি।
এ হৃদয়ে আছে শত কথা
মনের কাছে আমি আজ বাধা।
মনের কথা মনেই থাক
হৃদয়ের দু:খ হৃদয়ে থাক,
আমি বলবো না, আমি বলবো না।
আমার এ মন বলে
সবাই আমার দু:খ বুঝে।
মনের কথা বলবো আমি নদীকে
মনের ব্যাথা ফুটাবো আকাশে।
তব হৃদয়ের যত ব্যাথা,
আমার হৃদয়েই থাকুক গাথা।
আমি বলবো না, আমি বলবো না।
তোমার জন্য অপেক্ষা
তুমি আসবে বলে
এই আমি বসে আছি।
তোমার বিরহের আগুনে
পুড়ছি দিনের পর দিন।
স্রোতের মত কলকল ধ্বনি
ঢেউ ভাঙা পানির মত
অফুরান তোমার হাসী,
আজো স্মৃতির আয়নায়
ভেসে ওঠে।
নাহ, সেই স্মৃতিগুলো আজও
আমাকে পুড়িয়ে মারে।
নিদারুন যাতনায় আমি
কবে আসবে তুমি?
আশা নিয়ে বসে আছি
বন্ধু ! ফিরে এসো তুমি।
নিষ্ঠুর তুমি
তুমি চলে যাবে ভাবিনি কোনদিন
তুমিই হবে আমার ভেবেছি সারাদিন।
মানুষ কি করে এত নিষ্ঠূর হয়
ভাবতে আমার কষ্ট হয়।
দুচোখে ছিল রঙ্গিন স্বপ্ন
তুমি নেই স্বপ্ন তাই বিপন্ন।
তুমিবিহীন কথা বলি পাখিদের সাথে
কথাগুলো মিশে যায় শুধুই বাতাসে।
ফিরে আসো বন্ধু বসে আছি আমি
বসে থাকবো তোমার লাগি দিবস যামী।
শৈশব চলে গেছে
হয় শৈশব!
আর তো ফিরবে না তুমি,
স্মৃতির পাতায় ভেসে আসে
তোমার কতো ছবি।
সারাদিন শুধু করেছি
খেলাধুলা ছুটোছুটি,
কারনে অকারনে সাথীদের
সাথে হয়েছি অভিমানী।
শৈশব চলে গেছে,
ফিরে পাওয়া যাবে না তারে,
যায় না পাওয়া যেমনি করে
পথের মাঝে পথকে হারালে।
আমাদের গ্রাম
আমাদের গ্রাম প্রকৃতির সুন্দর এক দান
অকৃত্রিম মায়া মমতায় ভরা সবার জীবন।
গায়ের পাশে বয়ে গেছে ছোট এক নদী
কিশোরেরা করে গোসল আর মাতামাতি।
কিষাণেরা লাঙল নিয়ে ছুটে যায় মাঠে
নিজ হাতে ফসল বুনে ফিরে আসে সাঝে।
বৈখাখে যায় পাওয়া আম আর জাম
সবুজ শ্যামল অপরুপ মোদের এ গ্রাম।
হাসি আর সুখ, আছে অনাবিল শান্তি
নিজ হাতে বিধাতা, গড়েছেন গ্রামটি।
বন্যা এলো দেশে
সর্বগ্রাসী বন্যা এলো
এবার আবার দেশে,
অসহায় মানুষের ঘরবাড়ি
সবি গেলো ভেসে।
ভানবাসী মানুষের কাটছে
দিন রোগে অনাহারে,
কাঁদছে আকাশ কাদছে বাতাস
তাদের হাজার চিতকারে।
ক্ষুধা আর তৃষ্ণায় আজ
লাখো মানুষ মরার পথে,
একটু খাবার পাবার আশায়
ধরছে লাইন পথে ঘাটে।
সহানভুতি আর সহায়তা
দরকার আজ তাদের,
দুটো খাবার তুলে দেয়া
দরকার আজ মোদের।
বাঁকা চাঁদের হাসিতে
বাঁকা চাঁদের হাসিতে আজ
মনটা কেমন করে,
ঈদের খুশি, হাসির আমেজ
সবার ঘরে ঘরে।
সবাই মিলে বাজাবো আজ
আনন্দরই বীন,
সাজবে সবাই, বুঝবে সবাই
আজকে ঈদের দিন।
ঈদের দিনে সবাই মিলে
শপথ নিবো আজ,
গড়বো মোরা সম্প্রীতি
আর শান্তিরই এক রাজ।
জীবন তরী
নতুন গানের সুর মুর্চণায়
জীবন তরী যায় ভেসে যায়।
দুই কিনারায় ঢেউ ওঠেছে
সেই সুরেতে মন মেতেছে।
সীমানাকে যায় ছাড়িয়ে
অজানারি পথ মাড়িয়ে।
মন মেলেছে নতুন আশায়
জীবন নামক স্বপ্ন পাখায়।
আমার মা
শুনলে আমার মা কথাটি
মনে লাগে শান্তি,
মা যে আমার দুর করে দেন
দু:খ দশা ক্লান্তি।
মা কথাটি মিষ্টি অতি
বড়ই মায়াময়,
পৃথিবীতে বেঁচে আছি
মায়ের উছিলায়।
মায়ের কাছে আদর স্নেহ
সবই আমি পাই,
তাইতো মাগো তোমার কাছে
থাকতে আমি চাই।
তোমার দোয়া মাগো আমার
জীবন চলার সাথী,
তোমার দোয়া চাই আমি
দিবস আর রাতি।
(উপরোক্ত ছড়া-কবিতাগুলো ১৯৯৮-২০০৫ সালের মধ্যে লেখা)