জাতিসংঘ সারাবিশ্বের দেশগুলোকে যে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করেছে তার মধ্যে সর্বনিম্মটি হচ্ছে এলডিসি বা স্বল্পোন্নত দেশ। ১৯৭১ সালে মাত্র ২৫টি রাষ্ট্র এলডিসির তালিকায় থাকলেও দারিদ্র্যের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ৪৮টি রাষ্ট্র এলডিসির তালিকায় নাম লিখিয়েছে। এলডিসির এ রাষ্ট্রগুলোকেই নিয়েই ৭-১৩ মে (২০১১) তুরস্কের ইস্তাম্বুলে জাতিসংঘের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) চতুর্থ সম্মেলন। ৪৮টি স্বল্পোন্নত দেশ ও ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্রের সরকার প্রধান ও প্রতিনিধি, জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন, ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান জোসে ম্যানুয়েল বারোসোও এবং বিভিন্ন দাতা দেশ ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা পাঁচদিনের এ সম্মেলনে অংশ নেন।
এ সম্মেলনে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর উন্নয়নের লক্ষ্যে আগামী এক দশকের কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। এই পরিকল্পনায় যে বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছেÑ জনগণের জন্য খাদ্য নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রদান, চিকিৎসা সেবা, জ্বালানি শক্তি সরবরাহ এবং উন্নত দেশ থেকে আর্থিক সাহায্য দেয়া।
এলডিসি দেশগুলোর সার্বিক অবস্থা উন্নয়নের মূল্যায়নে এবং এ রাষ্ট্রগুলোর প্রতি জি-৮ এবং ধনী দাতা রাষ্ট্রগুলোর অঙ্গীকার পূরণের লক্ষ্যে প্রতি দশ বছর পরপর এলডিসি সম্মেলন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ১৯৮১ সালে প্যারিসে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর প্রথম সম্মেলনের আয়োজন করে এবং একই স্থানে ১৯৯১ সালে দ্বিতীয় এবং ২০০১ সালে ব্রাসেলসে তৃতীয় সম্মেলনের আয়োজন করে।
এলডিসির এবারের সম্মেলনেও স্বল্পোন্নত রাষ্ট্রগুলোর দারিদ্র্য দূরীকরণে দাতা রাষ্ট্রগুলো সুস্পষ্ট কোন ঘোষণা দেয়নি। এলডিসি রাষ্ট্রগুলো নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ড. অর্জুন কারকি-সহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা সম্মেলন সম্পর্কে হতাশা ব্যক্ত করেছেন। তাঁরা বলেন, ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত তৃতীয় এলডিসি সম্মেলনে যেসব ঘোষণা দেয়া হয়েছিল তার অনেক কিছুই বাস্তবায়ন করা হয়নি। তাঁদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রাসেলস সম্মেলনের ঘোষণা অনুযায়ী ধনী রাষ্ট্রগুলো তাদের জিএনপি’র (এঘচ) ০.১৫ থেকে ০.২০ শতাংশ (অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট এসিস্ট্যান্ট-ঙউঅ) এলডিসি রাষ্ট্রগুলোকে দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হয়নি। তারা এলডিসি রাষ্ট্রগুলোর জন্য ১০০ শতাংশ শুল্কমুক্ত পণ্য রফতানির সুবিধা দেয়ার আহ্বান জানান।
সম্মেলনের উদ্যোক্তা তুরস্ক নিজেকে দাতা রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। দেশটি প্রতিবছর এলডিসি দেশগুলোর জন্য দু শ’ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্ধ দেবে। তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রেসেপ তাইফ এরদুগান সম্মেলনে তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার জন্য এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও আমরা দুঃখের সঙ্গে দেখছি যে, এ সম্মেলনে বেশকিছু ধনী রাষ্ট্র যোগদান করেনি। একই সঙ্গে তারা এলডিসি রাষ্ট্রগুলোকে সহায়তা করার বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ঘোষণা দেয়নি। ধনী রাষ্ট্রগুলো স্বল্পোন্নত রাষ্ট্রগুলোর সাহায্যে এগিয়ে না আসলে ভবিষ্যত পৃথিবীর জন্য একটি অভিশাপ ভয়ে আসবে।’
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিষয়ে জোরালো ব্যবস্থা নেয়ার জন্যও শক্ত বার্তা দেয়া প্রয়োজন এলডিসি সম্মেলন থেকে। দ্রুত এ বিষয়ে একটি ন্যায্য ও কঠোর চুক্তি না হলে বিশ্বের অতিদরিদ্র মানুষের জীবনে বিপর্যয় নেমে আসবে। কিন্তু দেখা গেছে, কিয়োটো প্রটোকল বাস্তবায়নের বিষয়ে কোন ঘোষণা দেয়া হয়নি এ সম্মেলনে। সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন এলডিসিভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর বিভিন্ন করুণ চিত্র তুলে ধরলেও কোন আশার বাণী শোনাতে পারেননি।
এলডিসি সম্মেলনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ
এলডিসি গ্র“পের সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণে, সামাজিক, আর্থিক ও মানবসম্পদ বাড়াতে উন্নয়ন সহযোগীদের অবশ্যই এগিয়ে আসতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘অবকাঠামোগত দুর্বলতাসহ ভঙ্গুর অর্থনীতি, সম্পদ সৃষ্টিসহ প্রযুক্তি ও যোগাযোগের অপ্রতুলতা, বৈশ্বিক সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রক্রিয়ায় যথাযথ অংশগ্রহণের অভাব এবং বহিঃচাপের ঝুঁকি এলডিসিকে আজ অনিরাপদ করে তুলেছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, অনেক উন্নয়ন অংশীদার আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি, অনেকে এগিয়েই আসেনি। তারা অতিরিক্ত অঙ্গীকারের ব্যর্থতার জন্য সাম্প্রতিক বৈশ্বিক মন্দার কথা তুলে ধরেছেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের উৎস হচ্ছে উন্নত দেশগুলো। পক্ষান্তরে এতে অধিকাংশ স্বল্পোন্নত দেশ মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশগুলোর প্রয়োজনের কেন্দ্রে রয়েছে খাদ্য নিরাপত্তা। ওডিএ হ্রাস, বিনিয়োগ, রফতানি আয়, রেমিট্যান্স, পর্যটন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও খাদ্যমূল্যের কারণে আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনে জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ ক্ষতিগ্রস্ত এবং দু কোটিরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে। এতে বিদ্যমান জীববৈচিত্র ও পরিবেশ ধ্বংস হবে। অধিকাংশ স্বল্পোন্নত দেশ একই পরিস্থিতির শিকার হবে এবং এজন্য জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তাদেরকে অবশ্যই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’
ক্রমেই বেড়েছে এলডিসির সংখ্যা
এলডিসি বলতে কী বোঝায়, কারা এলডিসিভুক্ত রাষ্ট্র বা কেন তারা এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত? এলডিসি সম্মেলন চলাকালীন সময়ে এ প্রশ্নগুলো অনেকের মনে উদিত হয়। এলডিসি মানে হলো- লিস্ট ডেভেলপড কান্ট্রি বা স্বল্পোন্নত দেশ। জাতিসংঘ সারাবিশ্বের দেশগুলোকে যে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করেছে তার মধ্যে সর্বনিম্মটি হচ্ছে এলডিসি বা স্বল্পন্নোত দেশ। অপর দুটি হলো উন্নত বা ডেভেলপড কান্ট্রিজ এবং উন্নয়নশীল বা ডেভেলপিং কান্ট্রিজ। জাতিসংঘ ১৯৭১ সাল থেকে যেসব দেশের মাথাপিছু আয় ১১ শ’ ইউএস ডলারের নীচে তাদেরকে এলডিসির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। ১৯৯১ সালে এসে এলডিসি হিসেবে মাথাপিছু জিডিপির হার নতুনভাবে নির্ধারণ করা হয় ৭ শ’ ডলার। তবে ২০০৯ এ এসে আবার ১১ শ’ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
১৯৭১ সালে প্রথম যখন তালিকা করা হয় তখন এলডিসিভুক্ত রাষ্ট্র ছিল মাত্র ২৫টি। বর্তমানে তা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৪৮টি রাষ্ট্র হয়েছে। এর মধ্যে আফ্রিকায় ৩৩টি, এশিয়ায় ৯টি,ওশেনিয়ার ৫টি এবং ল্যাটিন আমেরিকায় ১টি। এলডিসি সদস্য রাষ্ট্রে ৮৫ কোটি মানুষের বসবাস, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ। এর মধ্যে ৭৫% দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। ২০৫০ সাল নাগাদ এলডিসির মোট জনসংখ্যা দ্বিগুণ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অর্থনৈতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ও সামাজিকভাবে দুর্বল এলডিসিভুক্ত দেশগুলো বিশ্ববাণিজ্যের কেবল এক শতাংশ, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) দু শতাংশ, এবং সেবা-বাণিজ্যের মাত্র ০.৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে।
স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) নাজুক অবস্থা, কাঠামোগত দুর্বলতা ও নিত্য অর্থনৈতিক চরমাবস্থার ফলে এর উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে। এলডিসি দেশগুলোর মাথাপিছু আয় ১৯৭১ সালে বৈশ্বিক গড়ের ১৮ শতাংশের তুলনায় হ্রাস পেয়ে ২০০৮ সালে ১৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে কিছুটা অগ্রগতি হলেও দিনে দু ডলারের কম উপার্জনকারী ৭৫ শতাংশ লোকের অবস্থা এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে। এমডিজির লক্ষ্য অর্জনে এলডিসি অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের পেছনে পড়ে যাচ্ছে। তারা একইভাবে প্রযুক্তি ও যোগাযোগের ক্ষেত্রেও পিছিয়ে পড়ছে এবং অব্যাহতভাবে একাকিত্বের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে।
এলডিসি এবং বাংলাদেশ
গত সাড়ে তিন দশক ধরে বাংলাদেশ এলডিসির রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অবস্থান করছে। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘে আবেদন করে এলডিসি রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করে। কারণ, এর আগে বাংলাদেশ পাকিস্তানের অংশ হিসেবে মধ্য আয়ের দেশগুলোর অন্তর্ভুক্ত ছিল। স্বাধীনতার তিন বছর পর উন্নত রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে নানা সাহায্য এবং বিশ্ববাণিজ্যে বিশেষ সুবিধা পেতে বাংলাদেশের আবেদনের ভিত্তিতে জাতিসংঘ এলডিসিভুক্ত করে নেয়। কারণ হলো, এলডিসি থেকে বেরিয়ে এলে বাংলাদেশ উন্নত ও অগ্রসর উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিনাশুল্কে পণ্য রফতানি করার সুবিধা হারাবে। কিন্তু বাংলাদেশ কখনই প্রতিশ্র“ত বিদেশি সাহায্য পুরোপুরি পায়নি। আশির দশকের সাহায্য নির্ভর একটি দেশ থেকে বাংলাদেশ গত ২০ বছরে একটি বাণিজ্য নির্ভর দেশে পরিণত হয়েছে। ফলে বাংলাদেশের সামনে নতুন ধরনের কিছু চ্যালেঞ্জ এসে উপস্থিত হয়েছে।
পরবর্তীতে এলডিসি থেকে বের হওয়ার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও খুব একটা সফলতা পাওয়া যায়নি। সাম্প্রতিক সময়ে জিডিপি ছয় শতাংশের কাছাকাছি হারে ধারাবাহিকভাবে অর্জিত হচ্ছে। তবে তা প্রতিবেশী অন্যান্য রাষ্ট্রগুলো থেকে তুলনায় কম। এখানকার গরীব মানুষেরা এই প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির সুফল পাচ্ছে না। শিক্ষা ও চিকিৎসার মান বাড়ছে না। দেশে দারিদ্র্যের হার কমলেও কমছে না বেকারত্বের হার। একই সঙ্গে কমছে না দুর্নীতির হারও। ধনী গরীব বৈষম্য দিনদিন বেড়েই চলছে।
বাংলাদেশ কি এলডিসি থেকে বের হতে পারবে
মহাজোট সরকার ২০০৮ সালে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে এলডিসির কাতার থেকে বের করে একটি মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত করার ঘোষণা দেয়। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে এলডিসি থেকে বের হতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
এলডিসি থেকে বের হওয়ার জন্য দুর্নীতি কমানো, বিনিয়োগ বাড়ানো, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক সহযোগিতা নিশ্চিত করার বিষয়ে সরকার যথাযথ পরিকল্পনা বা কৌশল প্রণয়ন করতে পারেনি। অর্থনীতির বর্তমান গতিধারা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালেও মাথাপিছু আয়ের হিসেবে বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে বের করে আনা সম্ভব হবে না।
এলডিসির কাতার থেকে বেরিয়ে আসার আসার জন্য যে তিনটি শর্ত রয়েছে, তার অন্যতম হল মাথাপিছু জাতীয় আয় সর্বনিম্ন ১১ শ’ ডলারের উপরে হতে হবে এবং টানা তিন বছর এর স্থায়ীত্ব থাকতে হবে। এছাড়া আর দুই শর্ত হলোÑ শিক্ষা ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রে মানব উন্নয়ন সূচক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন।
বর্তমানে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় সাড়ে ৭ শ’ ডলারের কাছাকাছি। সরকারের সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০২১ সালে গিয়ে তা ১,৫৫০ ডলারে দাঁড়াবে। কিন্তু ‘ইউএনডিপি’ থেকে ধারণা দেয়া হয়েছে যে, এলডিসি থেকে বেরিয়ে আসার আসার শর্ত হিসেবে এটি ১,২৫০ ডলারের কাছাকাছি করা হবে। তাই বাংলাদেশ সহজে এলডিসি থেকে বের হতে পারবে না। তবে বাংলাদেশ যদি জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এক শতাংশের নীচে নামাতে পারে, অর্থনৈতিক দৃঢ়তা রক্ষা করে মূল্যস্ফীতি পাঁচ শতাংশের নীচে সীমাবদ্ধ রাখতে পারে এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ব্যাপক উন্নতি করতে পারে তাহলে মাথাপিছু আয় বেড়ে গিয়ে মধ্য আয়ের দেশে উপনীত হতে পারবে।
৩১ এপ্রিল ঢাকায় এক সেমিনারে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘বাংলাদেশের মত এলডিসিগুলোর জন্য এখন চারটি নতুন ঝুঁকি রয়েছে। এগুলো হলো- খাদ্য নিরাপত্তা, জ্বালানি নিরাপত্তা, পরিবেশগত ভারসাম্যহীনতা ও আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থার ভঙ্গুরতা। বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হতে আয়, মানবসম্পদ ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি তিনটির মধ্যে দুটি সূচক অতিক্রম করতে হবে। এরই মধ্যে অর্থনৈতিক ঝুঁকির সূচক আমরা অতিক্রম করেছি। তবে বাকি দুটির মধ্যে মানবসম্পদ সূচক উন্নয়নে বেশি জোর দিতে হবে। কেননা জনসংখ্যার আধিক্যের কারণে দেশজ আয় বাড়লেও মাথাপিছু আয় আগামী ১০/১২ বছরে দেড় হাজার ডলারে উন্নীত করা কঠিন। এ জন্য মানবসম্পদ উন্নয়নে জোর দেয়া হলে আগামী ১০ বছরে এলডিসি থেকে বাংলাদেশের বের হয়ে যাওয়া সম্ভব।’
তবে আশার কথা হলো- বিশ্বমন্দা সত্ত্বেও বাংলাদেশ প্রবৃদ্ধির হার ছয় শতাংশ ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। বিনিয়োগ ব্যাংক ‘গোল্ডম্যান স্যাচ’ ও জেপি মরগান বাংলাদেশ ভবিষ্যতে ব্যাপক উন্নতি করতে সক্ষম হবে বলে মনে করে। বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৫৭ শতাংশের বয়স ২৫ বছরের নীচে। দেশটিতে শ্র্রমিকের মজুরি অনেক কম বলে এখানে ব্যাপক বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে।
রাজনৈতিক ডটকম, ১২ মে ২০১১